বাচ্চাদের সৃজনশীলতা বিকাশের ৫টি দারুণ উপায়, যা আগে দেখেননি!

webmaster

Nostalgic Childhood Games**

"A group of children, fully clothed in traditional Bengali attire, playing traditional games in a rural village setting. The scene includes elements of: making mud toys, collecting leaves, and playing hide-and-seek. Warm sunlight, happy expressions, safe for work, appropriate content, family-friendly, perfect anatomy, correct proportions, well-formed hands, natural pose, professional."

**

ছোটবেলার দিনগুলোতে ফিরে যেতে কার না ভালো লাগে, তাই না? বিশেষ করে যখন মনে পড়ে সেইসব মজার খেলার কথা, যেগুলো আমাদের কল্পনাশক্তিকে আরও বাড়িয়ে দিত। এখনকার বাচ্চারা তো ভিডিও গেম আর মোবাইলে মুখ গুঁজে থাকে, কিন্তু আমরা তো কাগজ, পেন্সিল আর রং দিয়েই কত কিছু বানিয়ে ফেলতাম। বিশ্বাস করুন, এই খেলাগুলো শুধু মজার ছিল না, আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশেও দারুণ সাহায্য করত। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই খেলাগুলো বাচ্চাদের সৃজনশীলতাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়।আসুন, নীচে এই বিষয়ে আরও ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক।

আসুন, সেই সোনালী দিনগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করি এবং দেখি কোন খেলাগুলো আমাদের শৈশবকে রঙিন করে তুলেছিল।

পুরোনো দিনের খেলার জাদু: স্মৃতি আর আনন্দের মেলবন্ধন

জনশ - 이미지 1
ছোটবেলার খেলাগুলো শুধু খেলা ছিল না, সেগুলো ছিল আমাদের জীবনের একটা অংশ। সেই সময়গুলোতে আমরা কত কিছু শিখেছি, কত আনন্দ করেছি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। আমার মনে আছে, একবার বাবার সাথে লাটিম ঘোরাতে গিয়েছিলাম। প্রথমবার লাটিম ঘোরাতে না পারলেও, বাবার উৎসাহে শেষ পর্যন্ত পেরেছিলাম। সেই দিনের আনন্দটা আজও ভুলতে পারিনি।

মাটির পুতুল তৈরি: শৈল্পিক ছোঁয়া

তখন কারেন্ট ছিল না সবসময়। তাই বাবা-মা হারিকেন জ্বালিয়ে রাখতেন। সেই আলো-আঁধারিতে আমরা ভাই-বোনেরা মিলে মাটির পুতুল বানাতাম। প্রথমে মাটি নরম করে, তারপর ধীরে ধীরে পুতুলের আকার দিতাম। চোখ, মুখ, নাক সব হাতে তৈরি করতাম। সেই পুতুলগুলো দেখতে হয়তো সুন্দর ছিল না, কিন্তু আমাদের কাছে সেগুলো ছিল অমূল্য।

কাদা দিয়ে ঘর বানানো: কল্পনার জগৎ

বৃষ্টি হলেই আমাদের আনন্দ আর ধরে না। বাড়ির পেছনের উঠোনে জমে থাকা কাদা দিয়ে আমরা ছোট ছোট ঘর বানাতাম। সেই ঘরগুলোতে খেলনা পুতুল বসিয়ে দিতাম, যেন ওরাই আমাদের প্রতিবেশী। কাদা দিয়ে বানানো সেই ঘরগুলো ছিল আমাদের কল্পনার জগৎ।

পাতা কুড়ানো: প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব

বিকেলে খেলতে যেতাম পাশের গ্রামের মাঠে। সেখানে কত রকমের গাছ ছিল! আমরা বিভিন্ন গাছের পাতা কুড়াতাম, আর সেই পাতা দিয়ে নানা রকম জিনিস বানাতাম। কখনো পাতার মুকুট, কখনো বা পাতার নৌকা। প্রকৃতির সাথে আমাদের যেন এক গভীর বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল।

লুকোচুরি: উত্তেজনা আর হাসির খেলা

লুকোচুরি খেলার কথা মনে পড়লে আজও হাসি পায়। একজন চোখ বন্ধ করে গুনতো, আর বাকিরা গিয়ে লুকিয়ে পড়ত। যে সবার আগে খুঁজে বের করতে পারত, সে-ই হতো আজকের রাজা। এই খেলাটা খেলতে গিয়ে কতবার যে ঝোপের মধ্যে পড়ে গেছি, তার কোনো হিসাব নেই।

“ইচিং বিচিং”: ছোঁয়া বাঁচানোর পালা

“ইচিং বিচিং” খেলার নিয়ম ছিল একটু অন্যরকম। একজন অন্যকে ছুঁয়ে দিত, আর যে ছুঁয়ে দিত, তার দায়িত্ব ছিল অন্যদের বাঁচানো। এই খেলাটা খেলতে গিয়ে আমরা সবাই খুব দৌড়াদৌড়ি করতাম, আর সেই দৌড়ের মধ্যে যে কি আনন্দ ছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

“কানামাছি”: চোখ বাঁধা অবস্থায় পথ খোঁজা

“কানামাছি” খেলার কথা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়। একজনের চোখ বেঁধে দেওয়া হতো, আর সে অন্যদের ধরার চেষ্টা করত। চোখ বাঁধা অবস্থায় অন্যদের খুঁজে বের করাটা ছিল বেশ কঠিন। তবে এই খেলাটা আমাদের ইন্দ্রিয়গুলোকে আরও সজাগ করে তুলত।

কাগজের নৌকা: জলের সাথে মিতালী

বর্ষাকালে কাগজের নৌকা বানিয়ে জলে ভাসানোর স্মৃতি আজও উজ্জ্বল। ছোটবেলায় আমরা সবাই মিলে কাগজ দিয়ে নৌকা বানাতাম, আর সেই নৌকাগুলো পুকুরে কিংবা ডোবায় ভাসিয়ে দিতাম।

নৌকা তৈরির প্রস্তুতি: নিখুঁত কারিগরি

কাগজের নৌকা বানানোর জন্য প্রথমে দরকার ছিল একটা ভালো কাগজ। তারপর সেই কাগজটাকে ভাঁজ করে নৌকার আকার দেওয়া হতো। অনেকে আবার পেন্সিল দিয়ে নকশা করে নিত, যাতে নৌকাটা দেখতে আরও সুন্দর হয়।

বৃষ্টি ভেজা দিনে কাগজের নৌকার যাত্রা

বৃষ্টি পড়লেই আমরা ছুটে যেতাম বাড়ির সামনের পুকুরে। সেখানে নিজেদের বানানো নৌকাগুলো ভাসিয়ে দিতাম। ছোট ছোট ঢেউয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নৌকাগুলো এগিয়ে যেত, আর আমরা সবাই খুব খুশি হতাম।

খেলার নাম উপকরণ উপকারিতা মাটির পুতুল তৈরি মাটি, জল, রং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, হাতের কাজ উন্নত কাগজের নৌকা কাগজ কল্পনাশক্তির বিকাশ, সমস্যা সমাধান দক্ষতা বৃদ্ধি লুকোচুরি শারীরিক তৎপরতা, সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি

ঘুঁটি দিয়ে খেলা: বুদ্ধির লড়াই

ঘুঁটি দিয়ে খেলা মানেই ছিল যেন বুদ্ধির একটা পরীক্ষা। এই খেলায় একদিকে যেমন কৌশল লাগে, তেমনই লাগে মনোযোগ।

দাবা: মস্তিষ্কের ব্যায়াম

দাবা খেলাটা ছিল আমার দাদুর খুব প্রিয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তিনি দাবা খেলতেন, আর আমি মুগ্ধ হয়ে দেখতাম। এই খেলাটা যে শুধু একটা খেলা নয়, এটা মস্তিষ্কের একটা ব্যায়াম, সেটা আমি দাদুর কাছেই শিখেছি।

লুডু: ভাগ্যের পরীক্ষা

লুডু খেলাটা ছিল ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল। ছক্কা পড়লেই যেন আনন্দ আর ধরে না। তবে এই খেলায় হার-জিত দুটোই মেনে নিতে হতো।

পুতুল বিয়ে: আনন্দ আর সাজসজ্জা

পুতুল বিয়ে ছিল আমাদের কাছে একটা উৎসবের মতো। পুতুলদের সাজানো থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, সব কিছুতেই আমরা খুব আনন্দ পেতাম।

পুতুলদের সাজানো: রঙিন স্বপ্ন

পুতুলদের সুন্দর করে সাজানোর জন্য আমরা নানা রঙের কাপড় ব্যবহার করতাম। নিজের হাতে ছোট ছোট জামা বানিয়ে পুতুলদের পড়াতাম।

রান্নাবান্না: মজার আয়োজন

পুতুল বিয়ের জন্য আমরা ছোট ছোট হাঁড়ি-কুড়ি ব্যবহার করে রান্না করতাম। চাল, ডাল, সবজি সবকিছু দিয়েই একটা বিয়ের মেনু তৈরি করা হতো।

লাটিম: শৈশবের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ

গ্রামের মেঠো পথে লাটিম ঘোরানোর স্মৃতি আজও আমাকে নাড়া দেয়। নানা রঙে রাঙানো লাটিমগুলো যখন বনবন করে ঘুরতো, তখন মনে হতো যেন পুরো পৃথিবীটাই ঘুরছে।

লাটিম তৈরি: হাতে তৈরি খেলনা

আগেকার দিনে লাটিম কিনতে পাওয়া যেত না। তাই নিজেরাই বাঁশ বা কাঠ দিয়ে লাটিম তৈরি করতাম।

লাটিম ঘোরানো: কৌশল আর দক্ষতা

লাটিম ঘোরানোটা ছিল একটা শিল্প। প্রথমে লাটিমের চারপাশে দড়ি জড়াতে হতো, তারপর একটা ঝাঁকুনি দিয়ে লাটিমটাকে মাটিতে ছুঁড়ে মারতে হতো।

গোল্লাছুট: গ্রামীণ খেলার ঐতিহ্য

গোল্লাছুট খেলাটা আমাদের গ্রামের খুব জনপ্রিয় ছিল। এই খেলায় একদিকে যেমন দরকার শারীরিক দক্ষতা, তেমনই দরকার দলীয় সংহতি।

মাঠে প্রস্তুতি: দাগ টানা আর দল ভাগ

গোল্লাছুট খেলার জন্য প্রথমে মাটিতে দাগ কেটে মাঠ তৈরি করা হতো। তারপর দুটি দলে ভাগ হয়ে খেলা শুরু হতো।

দৌড় আর ছোঁয়া: উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত

এই খেলায় একজন অন্যকে ছোঁয়ার জন্য প্রাণপণ দৌড়াত, আর বাকিরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করত। এই দৌড়াদৌড়ির মধ্যে যে উত্তেজনাটা ছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।এই খেলাগুলো শুধু খেলা ছিল না, এগুলো ছিল আমাদের শৈশবের আনন্দ আর স্মৃতি। আজকের দিনে এই খেলাগুলো হয়তো হারিয়ে যেতে বসেছে, কিন্তু আমাদের মনে এগুলো সবসময় জীবন্ত থাকবে।আসুন, সেই সোনালী দিনগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করি এবং দেখি কোন খেলাগুলো আমাদের শৈশবকে রঙিন করে তুলেছিল।

পুরোনো দিনের খেলার জাদু: স্মৃতি আর আনন্দের মেলবন্ধন

ছোটবেলার খেলাগুলো শুধু খেলা ছিল না, সেগুলো ছিল আমাদের জীবনের একটা অংশ। সেই সময়গুলোতে আমরা কত কিছু শিখেছি, কত আনন্দ করেছি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। আমার মনে আছে, একবার বাবার সাথে লাটিম ঘোরাতে গিয়েছিলাম। প্রথমবার লাটিম ঘোরাতে না পারলেও, বাবার উৎসাহে শেষ পর্যন্ত পেরেছিলাম। সেই দিনের আনন্দটা আজও ভুলতে পারিনি।




মাটির পুতুল তৈরি: শৈল্পিক ছোঁয়া

তখন কারেন্ট ছিল না সবসময়। তাই বাবা-মা হারিকেন জ্বালিয়ে রাখতেন। সেই আলো-আঁধারিতে আমরা ভাই-বোনেরা মিলে মাটির পুতুল বানাতাম। প্রথমে মাটি নরম করে, তারপর ধীরে ধীরে পুতুলের আকার দিতাম। চোখ, মুখ, নাক সব হাতে তৈরি করতাম। সেই পুতুলগুলো দেখতে হয়তো সুন্দর ছিল না, কিন্তু আমাদের কাছে সেগুলো ছিল অমূল্য।

কাদা দিয়ে ঘর বানানো: কল্পনার জগৎ

জনশ - 이미지 2

বৃষ্টি হলেই আমাদের আনন্দ আর ধরে না। বাড়ির পেছনের উঠোনে জমে থাকা কাদা দিয়ে আমরা ছোট ছোট ঘর বানাতাম। সেই ঘরগুলোতে খেলনা পুতুল বসিয়ে দিতাম, যেন ওরাই আমাদের প্রতিবেশী। কাদা দিয়ে বানানো সেই ঘরগুলো ছিল আমাদের কল্পনার জগৎ।

পাতা কুড়ানো: প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব

বিকেলে খেলতে যেতাম পাশের গ্রামের মাঠে। সেখানে কত রকমের গাছ ছিল! আমরা বিভিন্ন গাছের পাতা কুড়াতাম, আর সেই পাতা দিয়ে নানা রকম জিনিস বানাতাম। কখনো পাতার মুকুট, কখনো বা পাতার নৌকা। প্রকৃতির সাথে আমাদের যেন এক গভীর বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল।

লুকোচুরি: উত্তেজনা আর হাসির খেলা

লুকোচুরি খেলার কথা মনে পড়লে আজও হাসি পায়। একজন চোখ বন্ধ করে গুনতো, আর বাকিরা গিয়ে লুকিয়ে পড়ত। যে সবার আগে খুঁজে বের করতে পারত, সে-ই হতো আজকের রাজা। এই খেলাটা খেলতে গিয়ে কতবার যে ঝোপের মধ্যে পড়ে গেছি, তার কোনো হিসাব নেই।

“ইচিং বিচিং”: ছোঁয়া বাঁচানোর পালা

“ইচিং বিচিং” খেলার নিয়ম ছিল একটু অন্যরকম। একজন অন্যকে ছুঁয়ে দিত, আর যে ছুঁয়ে দিত, তার দায়িত্ব ছিল অন্যদের বাঁচানো। এই খেলাটা খেলতে গিয়ে আমরা সবাই খুব দৌড়াদৌড়ি করতাম, আর সেই দৌড়ের মধ্যে যে কি আনন্দ ছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

“কানামাছি”: চোখ বাঁধা অবস্থায় পথ খোঁজা

“কানামাছি” খেলার কথা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়। একজনের চোখ বেঁধে দেওয়া হতো, আর সে অন্যদের ধরার চেষ্টা করত। চোখ বাঁধা অবস্থায় অন্যদের খুঁজে বের করাটা ছিল বেশ কঠিন। তবে এই খেলাটা আমাদের ইন্দ্রিয়গুলোকে আরও সজাগ করে তুলত।

কাগজের নৌকা: জলের সাথে মিতালী

বর্ষাকালে কাগজের নৌকা বানিয়ে জলে ভাসানোর স্মৃতি আজও উজ্জ্বল। ছোটবেলায় আমরা সবাই মিলে কাগজ দিয়ে নৌকা বানাতাম, আর সেই নৌকাগুলো পুকুরে কিংবা ডোবায় ভাসিয়ে দিতাম।

নৌকা তৈরির প্রস্তুতি: নিখুঁত কারিগরি

কাগজের নৌকা বানানোর জন্য প্রথমে দরকার ছিল একটা ভালো কাগজ। তারপর সেই কাগজটাকে ভাঁজ করে নৌকার আকার দেওয়া হতো। অনেকে আবার পেন্সিল দিয়ে নকশা করে নিত, যাতে নৌকাটা দেখতে আরও সুন্দর হয়।

বৃষ্টি ভেজা দিনে কাগজের নৌকার যাত্রা

বৃষ্টি পড়লেই আমরা ছুটে যেতাম বাড়ির সামনের পুকুরে। সেখানে নিজেদের বানানো নৌকাগুলো ভাসিয়ে দিতাম। ছোট ছোট ঢেউয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নৌকাগুলো এগিয়ে যেত, আর আমরা সবাই খুব খুশি হতাম।

খেলার নাম উপকরণ উপকারিতা মাটির পুতুল তৈরি মাটি, জল, রং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, হাতের কাজ উন্নত কাগজের নৌকা কাগজ কল্পনাশক্তির বিকাশ, সমস্যা সমাধান দক্ষতা বৃদ্ধি লুকোচুরি শারীরিক তৎপরতা, সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি

ঘুঁটি দিয়ে খেলা: বুদ্ধির লড়াই

ঘুঁটি দিয়ে খেলা মানেই ছিল যেন বুদ্ধির একটা পরীক্ষা। এই খেলায় একদিকে যেমন কৌশল লাগে, তেমনই লাগে মনোযোগ।

দাবা: মস্তিষ্কের ব্যায়াম

দাবা খেলাটা ছিল আমার দাদুর খুব প্রিয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তিনি দাবা খেলতেন, আর আমি মুগ্ধ হয়ে দেখতাম। এই খেলাটা যে শুধু একটা খেলা নয়, এটা মস্তিষ্কের একটা ব্যায়াম, সেটা আমি দাদুর কাছেই শিখেছি।

লুডু: ভাগ্যের পরীক্ষা

লুডু খেলাটা ছিল ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল। ছক্কা পড়লেই যেন আনন্দ আর ধরে না। তবে এই খেলায় হার-জিত দুটোই মেনে নিতে হতো।

পুতুল বিয়ে: আনন্দ আর সাজসজ্জা

পুতুল বিয়ে ছিল আমাদের কাছে একটা উৎসবের মতো। পুতুলদের সাজানো থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, সব কিছুতেই আমরা খুব আনন্দ পেতাম।

পুতুলদের সাজানো: রঙিন স্বপ্ন

পুতুলদের সুন্দর করে সাজানোর জন্য আমরা নানা রঙের কাপড় ব্যবহার করতাম। নিজের হাতে ছোট ছোট জামা বানিয়ে পুতুলদের পড়াতাম।

রান্নাবান্না: মজার আয়োজন

পুতুল বিয়ের জন্য আমরা ছোট ছোট হাঁড়ি-কুড়ি ব্যবহার করে রান্না করতাম। চাল, ডাল, সবজি সবকিছু দিয়েই একটা বিয়ের মেনু তৈরি করা হতো।

লাটিম: শৈশবের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ

গ্রামের মেঠো পথে লাটিম ঘোরানোর স্মৃতি আজও আমাকে নাড়া দেয়। নানা রঙে রাঙানো লাটিমগুলো যখন বনবন করে ঘুরতো, তখন মনে হতো যেন পুরো পৃথিবীটাই ঘুরছে।

লাটিম তৈরি: হাতে তৈরি খেলনা

আগেকার দিনে লাটিম কিনতে পাওয়া যেত না। তাই নিজেরাই বাঁশ বা কাঠ দিয়ে লাটিম তৈরি করতাম।

লাটিম ঘোরানো: কৌশল আর দক্ষতা

লাটিম ঘোরানোটা ছিল একটা শিল্প। প্রথমে লাটিমের চারপাশে দড়ি জড়াতে হতো, তারপর একটা ঝাঁকুনি দিয়ে লাটিমটাকে মাটিতে ছুঁড়ে মারতে হতো।

গোল্লাছুট: গ্রামীণ খেলার ঐতিহ্য

গোল্লাছুট খেলাটা আমাদের গ্রামের খুব জনপ্রিয় ছিল। এই খেলায় একদিকে যেমন দরকার শারীরিক দক্ষতা, তেমনই দরকার দলীয় সংহতি।

মাঠে প্রস্তুতি: দাগ টানা আর দল ভাগ

গোল্লাছুট খেলার জন্য প্রথমে মাটিতে দাগ কেটে মাঠ তৈরি করা হতো। তারপর দুটি দলে ভাগ হয়ে খেলা শুরু হতো।

দৌড় আর ছোঁয়া: উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত

এই খেলায় একজন অন্যকে ছোঁয়ার জন্য প্রাণপণ দৌড়াত, আর বাকিরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করত। এই দৌড়াদৌড়ির মধ্যে যে উত্তেজনাটা ছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

এই খেলাগুলো শুধু খেলা ছিল না, এগুলো ছিল আমাদের শৈশবের আনন্দ আর স্মৃতি। আজকের দিনে এই খেলাগুলো হয়তো হারিয়ে যেতে বসেছে, কিন্তু আমাদের মনে এগুলো সবসময় জীবন্ত থাকবে।

শেষ কথা

এই খেলাগুলো আমাদের শৈশবের সোনালী দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়।

আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের শিশুদের এই খেলাগুলোর সাথে পরিচিত করি।

তাহলে তারাও আমাদের মতো সুন্দর স্মৃতি তৈরি করতে পারবে।

পুরোনো দিনের এই খেলাগুলো আমাদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের অংশ।

দরকারি কিছু তথ্য

1. মাটির পুতুল তৈরি করার সময় পরিষ্কার মাটি ব্যবহার করুন।

2. কাগজের নৌকা বানানোর জন্য ভালো মানের কাগজ ব্যবহার করুন, যা সহজে ভিজবে না।

3. লুকোচুরি খেলার সময় সাবধানে খেলুন, যাতে কেউ আঘাত না পায়।

4. লাটিম ঘোরানোর সময় খেয়াল রাখুন, যাতে আশেপাশে কেউ না থাকে।

5. গোল্লাছুট খেলার সময় দলবদ্ধভাবে খেলুন এবং একে অপরের প্রতি সহযোগিতা বজায় রাখুন।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সারসংক্ষেপ

পুরোনো দিনের খেলাগুলো আমাদের শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

এই খেলাগুলো আমাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে।

এগুলো আমাদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের অংশ, যা আমাদের মনে রাখা উচিত।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: বাচ্চাদের সৃজনশীলতা বিকাশে খেলার গুরুত্ব কী?

উ: ছোটবেলার খেলাধুলা শুধু সময় কাটানোর উপায় নয়, এটি শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যখন আমরা কাগজ দিয়ে নৌকা বানিয়ে বৃষ্টিতে ভাসাতাম, তখন আমাদের মধ্যে একটা অন্যরকম আনন্দ কাজ করত। এই ধরনের খেলাগুলো বাচ্চাদের কল্পনাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, যা তাদের সৃজনশীলতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়।

প্র: কোন ধরনের খেলা বাচ্চাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী?

উ: আসলে, সব ধরনের খেলাই বাচ্চাদের জন্য ভালো, তবে কিছু খেলা বিশেষভাবে উপকারী। যেমন, ছবি আঁকা, গল্প লেখা, বা নিজের হাতে কিছু তৈরি করা – এইগুলো তাদের সৃজনশীলতাকে সরাসরি প্রভাবিত করে। আমি দেখেছি, আমার ছোট ভাই যখন LEGO দিয়ে নতুন কিছু বানানোর চেষ্টা করত, তখন তার মধ্যে একটা অন্যরকম উদ্দীপনা কাজ করত। এই ধরনের খেলাগুলো তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

প্র: বাচ্চাদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করার জন্য অভিভাবকদের কী করা উচিত?

উ: অভিভাবকদের উচিত বাচ্চাদের জন্য খেলার একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা। তাদের নিজেদেরও বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলায় অংশ নেওয়া উচিত। আমি মনে করি, যখন বাবা-মা তাদের বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করে, তখন তাদের মধ্যে একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়। এছাড়াও, অভিভাবকদের উচিত বাচ্চাদের তাদের পছন্দের খেলাগুলো খেলতে দেওয়া এবং তাদের উৎসাহিত করা। তবে খেয়াল রাখতে হবে, তারা যেন শুধু মোবাইল বা ভিডিও গেমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে।